নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁর একটি রিসোর্টে শনিবার (৩ এপ্রিল) হেফাজতে ইস’লামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মা’ওলানা মামুনুল হককে অব’রুদ্ধ করে রাখা হয়। ঘটনার সময় তাকে এক নারীসহ আ’ট’ক করা হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।
মামুনুল হক ওই নারীকে নিজের বিয়ে করা দ্বিতীয় স্ত্রী’ হিসেবে পরিচয় দিলেও বিষয়টির পক্ষে-বিপক্ষে বিপুল জনমত তৈরি হয়। বিয়ের ধরন স’ম্পর্কেও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এরইমধ্যে পাওয়া গেলো মা’ওলানা মিজানুর রহমান আজহারীর বয়ান।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাই’রাল হওয়া ওই ভিডিওতে আজহারী বলছেন, বিয়ের ঘোষণায় ব্যান্ড পার্টি করতে বলেছেন বিশ্বনবী (সা.)। কারণ বিয়েতে একজন নারী-পুরুষের যে স’ম্পর্ক হয়, জেনা ও ব্যভিচারে একই স’ম্পর্ক হয়। পার্থক্য হচ্ছে এটার সামাজিক স্বীকৃতি আছে, জেনার স্বীকৃতি নেই। এজন্য বিয়ে গো’পন করে করা যায় না। এটা অ্যানাউন্স করে করতে হয়।
ইস’লামের খলিফাদের জীবন প্রসঙ্গ টেনে এই ইস’লামী বক্তা বলেন, ‘ওম’র ফারুক (র.) যখন ম’দিনার খলিফা বলতেন লুকিয়ে লুকিয়ে যদি কেউ বিয়ে করে তাদের প্রতিবেশীরা যদি তাদের দাম্পত্য জীবন স’ম্পর্কে না জানে তাহলে আমি তাদের দু’জনকে জেনার শা’স্তি দেবো।
পুরনো এক ওয়াজ মাহফিলের বয়ানের ওই ভিডিওতে আজহারী বলেন, লুকিয়ে বিয়ে করা যায় না, সবাইকে জানিয়ে-শুনিয়ে অ্যানাউন্স করে বিয়ে করতে হয়। এজন্য ইস’লাম শুধু হারাম বলে জিকির করে নেই। যেখানেই হারাম তার বিপরীতে ইস’লামে হালালের বিকল্প দিয়েছে। এদিকে রোববার সকালে মামুনুল ওই নারীকে বিয়ের বিষয়টি অবতারণা করে বলেন, রাগের মা’থায় সংসার ভেঙে গভীর সংকটে পড়ে যান তিনি। ওই পরিস্থিতিতে তার জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
স্বাভাবিকভাবেই তিনি আমা’র শরণাপন্ন হন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে করণীয় বিষয়ে পরাম’র্শ নেন। আর সেই দুঃসময়ে সহযোগিতা করার মতো আমি ছাড়া আর কেউ ছিল না তার। ইস’লামী দৃষ্টিকোণ এবং অ’ভিভাবকত্বের জায়গা থেকে আমি তার অর্থনৈতিক দায়িত্ব গ্রহণ করি। জীবনের করণীয় বিষয়ে দিকনির্দেশনার জন্য নিয়মিতই আমা’র সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হয় তাকে।
শরিয়তের দিক থেকে এই স’ম্পর্ক ঝুঁ’কিপূর্ণ বলে মনে করেন মামুনুল। তিনি বলেন, এমতাবস্থায় একজন বেগানা নারীর সঙ্গে এভাবে স’ম্পর্ক রাখাকে শরিয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে আমা’র কাছে ঝুঁ’কিপূর্ণ মনে হয়। তখন আমি সিদ্ধান্ত নিই, যত দিন তার অ’ভিভাবকত্বের প্রয়োজন হবে আমা’র, তাকে বেগানা হিসেবে রেখে অ’ভিভাবকত্ব করবো না, বরং ইস’লামী শরিয়তের আলোকে বৈধ একটা স’ম্পর্ক তৈরি করে নেবো। বিষয়টি নিয়ে ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে কথা বলি এবং এ বিষয়ে তাদের জানিয়ে শরিয়তের বিধান অনুযায়ী বিয়ের কালেমা পড়ে বিয়ে করে নেই।
মামুনুল বলেন, দুই বছর যাবত এভাবেই মানবিক ও ইস’লামী দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে আমি তার অ’ভিভাবকত্ব করছি এবং একজন অসহায় নারীর দায়িত্ব গ্রহণ করে একটি পুণ্যের কাজ করেছি বলে বিশ্বা’স করি। আমি যা বললাম, এটা আল্লাহর নামে হাজারবার শপথ করে বলতে পারবো। বিষয়টি বিশ্বা’সযোগ্য করার জন্য কুল্লামা’র শপথও করতে পারি।